লালমনিরহাট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, দৈনিক জনকণ্ঠ ও বাসস এর সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম শাহীনের বিরুদ্ধে মিথ্যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের ও চাকুরিচ্যুত করায়, সারা দেশে সাংবাদিক হয়রানী, নির্যাতন বন্ধ ও মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সমাবেশ এবং স্মারকলিপি হস্তান্তর অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১০ এপ্রিল) সকাল ১১টায় লালমনিরহাট জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র মিশন মোড় চত্ত্বরে প্রেসক্লাব লালমনিরহাট, বাংলাদেশ প্রেসক্লাব লালমনিরহাট জেলা শাখা, টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরাম লালমনিরহাট এর যৌথ আয়োজনে এ মানববন্ধন ও সমাবেশ এবং স্মারকলিপি হস্তান্তর অনুষ্ঠিত হয়।
টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরাম লালমনিরহাটের সভাপতি মিলন পাটোয়ারী-এঁর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক মোঃ হেলাল হোসেন কবির, মাইটিভি প্রতিনিধি মাহফুজ সাজু, দৈনিক বাংলা পত্রিকার প্রতিনিধি শাহজাহান সাজু, টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরাম লালমনিরহাটের সাধারণ সম্পাদক একেএম মাজহারুল ইসলাম বিপু, সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার সম্পাদক মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ, লালমনিরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ আহমেদুর রহমান মুকুল, বাংলাদেশ প্রেসক্লাব লালমনিরহাট জেলা শাখার সভাপতি এস আর শরিফুল ইসলাম রতন, লালমনিরহাট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, দৈনিক জনকণ্ঠ ও বাসস এর সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম শাহীন প্রমুখ। এ সময় প্রেসক্লাব লালমনিরহাট, বাংলাদেশ প্রেসক্লাব লালমনিরহাট জেলা শাখা, টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরাম লালমনিরহাট এর অন্যান্য নেতৃবৃন্দসহ প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পরে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে “বাসস/ দৈনিক জনকণ্ঠের সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম শাহীন কে ষড়যন্ত্রমূলক চাকরীচ্যুতি ও বিএনপি দুই নেতার দায়ের করা মিথ্যে ডিজিটাল এ্যাক্ট মামলায় প্রতিবাদে জেলায় কর্মরত সংবাদ কর্মীর মানববন্ধন এবং প্রধানমন্ত্রী আপনাকে স্মারকলিপি প্রদান” বিষয়ে জেলায় কর্মরত সকল সাংবাদিকের পক্ষে আহমেদুর রহমান মুকুল, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম শাহীন, মাজহারুল ইসলাম বিপু, মোঃ শাহজাহান সাজু স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়।
স্মারকলিপি সূত্রে জানা গেছে, আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারী জেলায় প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনুমোদন প্রাপ্ত অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত সংবাদ কর্মী গণ আজ উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায় মধ্যে রয়েছি। তাই আপনার সহানুভূতিশীল দৃষ্টি কামনা করছি। প্রগতিশীল, সৎ, সহসী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের ছাত্রলীগের সাবেক পৌর সাধারণ সম্পাদক সংবাদকর্মী জাহাঙ্গীর আলম শাহীন ডিজিটাল এ্যাক্ট মামলায় হয়রানি করা হচ্ছে। দৈনিক জনকণ্ঠ ও বাসস জেলা প্রতিনিধি পদ হতে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তাঁকে আত্মপক্ষের কোন সুযোগ দেয়া হয়নি। যাহা দেশের সাংবিধানিক ও আইন পরিপন্থী। সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম শাহীন সুদীর্ঘ ২৮বছর ধরে দৈনিক জনকণ্ঠ ও প্রায় ১৪বছরে বাসস-এ জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ ইতিপূর্বে ছিল না। বর্তমানে কী অভিযোগে চাকরিচ্যূত করা হয়েছে জানা নেই। বরং ২০০১ সালে পর বিএনপি-জামাত জোট সরকার ক্ষমতায় এলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মৌলবাদ, হিন্দুসম্প্রদায় ও আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের ওপর নির্যাতন নিপীড়নের প্রতিবাদে সোচ্চার ছিল তার কলম । যার কারণে তাঁকে জবাই করে হত্যার চেষ্টা করা হয়। একাধিক মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দেয়া হয়। সেই সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে সংসদে তার নাম উল্লেখ করে প্রতিবাদ জানিয়ে ছিলেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঘোষিত নির্যাতিত সাংবাদিকদের শ্বেতপত্রে তার নাম রয়েছে। সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম শাহীন শিক্ষা জীবনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ লালমনিরহাট পৌর শাখার ১৯৮৮-১৯৯২ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে- ২০০১ সাল হতে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ৭১’র ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির লালমনিরহাট জেলা শাখার সদস্য সচিব ছিলেন। আপনি যতবার রাজনৈতিক সফরে এসেছেন আপনার সাথে ছিল। জেলায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী একজন সাংবাদিক হিসেবে তার রয়েছে সুনাম। তার পরিবার আওয়ামী লীগের ভক্ত বাপ-চাচা মুক্তিযোদ্ধা। তাঁকে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপি নেতার বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক একেএম মইনুল হক একটি প্রভাবশালী মহলের সাথে হাত মিলিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করে চলছে। এই একেএম মইনুল হক ২০০১ সালে বিএনপি জামাত ক্ষমতায় এলে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মোঃ মতিয়ার রহমান ও সাবেক সংরক্ষিত আসনের মহিলা এমপি এ্যাডভোকেট মোছাঃ সফুরা বেগম রুমি ওপর জেলা প্রশাসকের দপ্তরে হামলা করেছিল। তার প্ররোচনায় অদৃশ্য প্রভাবশালী শক্তি সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম শাহীনের বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করে চলছে। সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দৈনিক জনকন্ঠ ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার জেলা প্রতিনিধি পদ হতে চাকরিচ্যুত করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চাকরি হারিয়ে এই মধ্য বয়সে এসে তিনি পড়েছেন মহাবিপাকে। তার দুইটি শিশু সন্তান একটি ৮ম শ্রেণিতে ও অন্যটি প্লে শ্রেণিতে লালমনিরহাট ক্যান্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে পড়ছে। তার চাকরি হারালে মাসিক আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে যাবে। আর্থিক সংকটের কারণে তার সন্তানদের পড়াশোনা চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে। পরিবারে রয়েছে বৃদ্ধ বাবা-মা তারা অসহায় হয়ে পড়বে। এমতাবস্থায় এই ৫২বছর (মধ্য বয়সে) অন্যকিছু কী করব? শূন্য হাতে শূন্য থেকে তার পক্ষে কোন কিছু করা একরকম অসম্ভব। চাকরিচ্যুত হলে অর্ধাহারে অনাহারে পরিবার পরিজন নিয়ে মৃত ছাড়া কিছু করার নেই। তার কোন ব্যক্তিগত সম্পদ নেই। বাবা-মা বেঁচে থাকায় পারিবারিক সম্পদে এখনো কোন অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এমন কোন কিছু নেই, বিক্রি করে নতুন কিছু, শুরু করতে পারবে। অত্যন্ত মানবিক কারণে বিনয়ের সাথে আমরা সকলে প্রার্থনা করেছি তাঁকে। দৈনিক জনকণ্ঠ ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থায় পুনরায় বহালের আবেদন মঞ্জুর করবেন। সেই সাথে বিএনপি নেতা একেএম মইনুল হকের প্ররোচনায় রংপুর আইসিটি আদালতে দুইটি মিথ্যা মামলা দায়ের হয়েছে। এই মামলা দুইটির একটি লালমনিরহাট সদর থানা ও অন্যটি একই জেলার কালীগঞ্জ থানায় তদন্তাধীন রয়েছে। ডিজিটাল এ্যাক্টের মিথ্যা মামলা দু’টি নিরপেক্ষ তদন্ত পূর্বক অব্যাহতি দানে প্রার্থনা করছেন। অতএব, মানবতার মা, জাতির পিতার কন্যা প্রধানমন্ত্রী আপনি আমাকে পরিবারের ভরন পোষণ সচল রাখতে ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা একজন কর্মীর দিক বিবেচনা করে আগামীর পথ চলতে সুগম করতে আজ্ঞা হন মর্মে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেছেন।